নবিজির সাথে ধৃষ্টতার ভয়ঙ্কর পরিণতি :
ইতিহাস সাক্ষী যে, আমাদের প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ধৃষ্টতার পরিণতি কখনো সুখকর হয়নি। ভয়ঙ্কর বিপর্যয়, চরম অবনতি ও লাঞ্ছনাকর মৃত্যুই হয়েছে এদের শেষ পরিণাম। বিধর্মীদের সাময়িক বাহবা বা পুরস্কার পেলেও আখেরে কপালে জুটেছে দুর্ভাগার সীল। এযাবৎকাল যত বেয়াদবি বা ধৃষ্টতা দেখা গেছে, তার সবই প্রায় ব্যক্তি কেন্দ্রিক বা দলীয় পর্যায়ে ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয়ভাবে আল্লাহর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে অপদস্ত করার হীন প্রচেষ্টা খুবই বিরল। এর নজির প্রথম দেখা যায় তৎকালীন বিশ্বের সুপার পাওয়ার পারস্যের শাহি দরবারে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে যখন পারস্যের বাদশার নিকট ইসলাম গ্রহণের আহবান-সংবলিত চিঠি পৌঁছল তখন সে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে সে পবিত্র চিঠি টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ভরা মজলিসে ছিটিয়ে দিল। খবরটি শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যারপরনাই মর্মাহত হলেন। পবিত্র জবান থেকে বেরিয়ে এল, مزّق الله ملكه (আল্লাহ তার রাজত্বকে টুকরো টুকরো করে দিন।) এরপর যা হলো—বাদশা রাতেই তার ছেলের হাতে নির্মমভাবে নিহত হলো আর তার রাজত্ব বছর কয়েকের ব্যবধানে স্রেফ টুকরো টুকরো হয়ে গেল!
এটা ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর প্রিয় হাবিবের জন্য স্পষ্ট প্রতিশোধ। প্রতিশোধের আগুন এতটাই তীব্র ছিল যে, পারসিকরা মুসলিমদের সাথে ময়দানে দাঁড়াতেই পারেনি। মুসলমানরা ভেড়ার পালের মতো তাদেরকে তাড়িয়ে মেরেছে। তাদের পুরুষদেরকে বন্দী করেছে আর নারীদেরকে করেছে দাসী-বাদী। এভাবেই আল্লাহ পুরো একটি জাতি ও তাদের ধর্মকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন। আজ তাদের কোনো অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায় না। ফ্রান্সের সাথেও এমনটা ঘটবে কি না, তা ভবিষ্যতই বলবে। তবে আমরা দুআ ও আশা করি, শয়তানদের দেশে এমন কিছু ঘটার।
আজকের ফ্রান্স যা করছে, নোংরামি ও হীনতার বিবেচনায় তা পারস্যের সে ঘটনাকেও হার মানাবে। পারস্যের ঘটনাটি তো ছিল অহঙ্কারমূলক, কিন্তু ফ্রান্সের ঘটনাটি স্রেফ নীচতা, দীনতা ও নিম্নরুচির সর্বনিকৃষ্ট পরিচায়ক। কোনো সভ্য মানুষ বা জাতি এমন কাজ করতে পারে, তা কল্পনাও করা যায় না। মূলত ফ্রান্স সভ্য ছিলই বা কবে? এরা তো ফকিন্নি ও লুটেরা জাতি। আফ্রিকা মহাদেশ লুটে সে অর্থে মোটাতাজা হয়ে আজ তারা বিশ্বকে মানবতা ও স্বাধীনতার সবক দেয়। লজ্জা বলতে যদি কিছু থাকে এদের! এদের নাম নিতেও তো ঘৃণা লাগে। চোর! ডাকাত!! শয়তান!!!
আমি মুসতাজাবুদ দাওয়াহ নই আর নই সাহিবু কাশফ, কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ফ্রান্সের এ ধৃষ্টতার জন্য তাকে দুটি বিপর্যয়ের যেকোনো একটির মুখোমুখি হতেই হবে। হয়তো সে মুসলিম জাতির কাছে পরাজিত কণ্ঠে নতি স্বীকার করে ক্ষমা-অযোগ্য এ অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে, নয়তো সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তার রাজত্বের ভরাডুবি ঘটবে। যদি সে ক্ষমা চায়ও ,তবুও সে বিপর্যয় থেকে পুরোপুরি বাঁচতে পারবে না। এর শাস্তি তাকে পেতেই হবে। আমরা জীবদ্দশায়ই ফ্রান্স জাতির লাঞ্ছনাকর পরিস্থিতি দেখতে পাব বি-ইজনিল্লাহ।
(আমরা এমন একটি শুভ সকালের অপেক্ষায় আছি, যেদিন ফজরের পর আমরা শুনতে পাব, আল্লাহর কোনো বান্দা শয়তানটাকে পরাভূত করেছে এবং জাতীয়ভাবে ফ্রান্সের আর্থিক, সামরিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ভরাডুবি শুরু হয়েছে। আপনি ভাবছেন, এগুলো এমনিতেই ঘটবে? হ্যাঁ, ঘটতে পারে, অসম্ভবের কিছু নেই। তবে এটা আল্লাহর নিজাম নয়। তিনি তো চান, তাঁর বান্দারা আগে এগিয়ে আসুক, তারপর তিনি সাহায্য করবেন। তাঁর সে সাহায্য পাওয়ার জন্য আমরা কতটা প্রস্তুত আছি, সেটা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন)
-মুফতি তারেকুজ্জামান দা.বা.